ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

‘বাংলাদেশে হামলা চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই আরসা’

নিউজ ডেস্ক :

রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) জানিয়েছে, বাংলাদেশে হামলা চালানোর কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই । কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করার নিশ্চয়তা দিয়েছে তারা।

২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।  সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে নিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ চালায়। বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। আশ্রয় নেয় শরণার্থী শিবিরে। বুধবার এক বিবৃতিতে আরসা জানায়, কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের কোনও স্থানেই হামলার পরিকল্পনা নেই তাদের। তাদের লড়াই মূলত ‘সন্ত্রাসী মিয়ানমার সরকারের’ বিরুদ্ধে। সংগঠনটির প্রধান আতাউল্লাহ আবু আমর জুনুনি বলেন, ‘আরসা নিশ্চিত করতে চায় যে আমরা বাংলাদেশে কোনও হামলা চালাবো না। লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের সহায়তায় যারা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তাদের সার্বভৌমত্বকে আমরা সম্মান জানাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আরসা কোনও বেসামরিকের ওপর হামলা সমর্থন করে না। যে ধর্মেরই হোক না কেন তাদের সম্পদ বা প্রার্থনার স্থানও ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় না।’

রাখাইন কমিশনের শীর্ষ ব্যক্তি সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনানের মিয়ানমার সফরের মধ্যেই ২৫ আগস্ট ২৪টি পুলিশ চেকপোস্টে সমন্বিত হামলা চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্যকে হত্যার দায় স্বীকার করে আরসা। এর একদিন পরেই হংকংভিত্তিক অনলাইন পত্রিকা এশিয়া টাইমসে আরসা’র প্রধান নেতা আতাউল্লাহ আবু আমর জুনুনির মুখপাত্র আবদুল্লাহর সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। কফি আনানের সফরের মধ্যেই কেন এমন হামলা— এ প্রশ্নের উত্তরে ওই সাক্ষাৎকারে আতাউল্লাহ বলেন, ‘আঘাতের জবাব দিতেই আরসা ওই সময় হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। আত্মরক্ষার আর কোনও বিকল্প ছিল না।’ যদিও ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের অধ্যাপক জাচারি আবুজা মনে করেন, সেনাবাহিনীকে বড় ধরনের পাল্টা আঘাতকে উদ্বুদ্ধ করতেই আরসা হামলা চালিয়েছিল। তবে আতাউল্লাহ ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আরসা ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে আমরা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় কাজ করবো। আর আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আর এজন্য আমাদের লক্ষ্য শুধু মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সরকার। আন্তর্জাতিক আইন মেনেই আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। যতদিন পর্যন্ত দাবি আদায় হবে আমরা লড়াই করে যাবো।’

যারা আরসার ছদ্মবেশে অবৈধ কার্যক্রম চালাচ্ছে তাদের সতর্ক করে দেন আতাউল্লাহ। তিনি জানান, প্রয়োজনে সংগঠনের নেতা ও সদস্যদের নাম প্রকাশ করবেন তিনি। এর আগে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আরসা জানিয়েছিল, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আগ্রহী নয় মিয়ানমার। বিশ্বের সাথে তারা ‘নোংরা রাজনীতি’ করছে। বাংলাদেশ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের মতে ২৮ আগস্ট ২০১৭ থেকে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৩৫০ জন রোহিঙ্গা এসেছেন। ১৬ জানুয়ারি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে এক সমঝোতায় স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।

পাঠকের মতামত: